পীরগঞ্জে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অর্ধশত ইটভাটা
মোঃ মোস্তফা মিয়া পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে আবাদী জমি নষ্ট করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অর্ধশত ইটভাটা। এসকল ইটভাটা দেখাশুনার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা রাজস্ব ও কাষ্টমস কার্যালয় এবং উপজেলা প্রশাসনের নেই কোন তদারকি ।
প্রকাশ, সম্প্রতি রংপুর বিভাগ ঘোষণার পর থেকে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলাসহ উপজেলা গুলোতে নতুন নতুন সরকারি বে-সরকারি তৈরি ও রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাক্তি মালিকানা উদ্দেগেও তৈরি অসংখ্য স্থাপনা, এ কারণে ইটের চাহিদাও বেড়েছে দ্বিগুণ হারে। অধিক চাহিদা ও মুনাফার কারণে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রতিযোগিতা মুলক গড়ে উঠেছে হাজারেরও অধিক নতুন নতুন ইটভাটা। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় গড়ে উঠেছে ৫১টি ইটভাটা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, ২০০৮ ও ২০০৯ সাল পর্যন্ত খোদ পীরগঞ্জ উপজেলায় ১৩টি ইটভাটা থাকলেও চলতি বছরে এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১টি। আর এই বাকী ৩৮টি, নতুন ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে আবাদী জমি নষ্ট করে। পরিবেশ অধিদপ্তরকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অনুমতি ছাড়া নির্মাণ করা হয়েছে এসকল ইটভাটা। এর অধিকাংশ ভাটাতে ফিক্সড চিমনির পরিবর্তে বিপদজনক ড্রাম চিমনি ব্যবহার করা হয়েছে। এদের অনেকের লাইসেন্স পর্যন্ত নেই। তাছাড়া পরিবেশ আইনে একটি ইটভাটার চতুরদিকে ৩ কিঃমিঃ এলাকার মধ্যে অপর ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকলেও পীরগঞ্জ সদরের পার্শ্বে ৩ কিঃমিঃ মধ্যে ৮টি ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলার ১নং চৈত্রকোল ইউনিয়নে ১ কিঃমিঃ মধ্যে ১০টি ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে এবং খালাশপীরে ২ কিঃমিঃ দূরত্বের মধ্যে ৬টি ইটভাটা তৈরি করা হয়েছে। এমনকি উপজেলার বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ লোকালয় ও আবাসিক এলাকাতেও প্রায় ১০টি ভাটা নির্মান করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, এ সকল ইটভাটা একেকটি কমপক্ষে ৩০ থেকে ৫০ একর পর্যন্ত আবাদী জমি দখল করে হচ্ছে করা হয়েছে এবং ভাটার পার্শ্বের শত শত একর জমি থেকে উর্বর মাটি কেটে তৈরি করা হচ্ছে ইট। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ক্ষতির আশংক্ষা রয়েছে অন্যদিকে আশপাশের জমি গুলো হারাচ্ছে উর্বরতা শক্তি। ঘন ঘন ইট ভাটার চিমনি থেকে নিগর্ত মনোঅক্সাইড, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন পরিবেশ দূষিত সহ লোকালয়ে জটিল রোগব্যাধির আশংকা করছেন পরিবেশবীদ ও এলাকাবাসী। পরিবেশ অধিদপ্তরে ও কাষ্টম অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে গড়ে উঠেছে এ সকল ইটভাটা। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ১৯৯২ সালের ইটভাটা নির্মাণ আইন লঙ্ঘন কারীদের দমনের জন্য কঠোর নির্দেশ থাকলেও বর্তমানে প্রশাসনিক ভাবে তা করা হ”েছনা। ফলে বেড়েই চলেছে ভাটা আর ভাটা। এ অবস্থা চলতে থাকলে একসময় আবাদী জমির চরম সংকটসহ পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দেবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর গুলোর কেন্দ্রিয় পর্যায়সহ বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অজ্ঞাত কারনে নেই কোন তৎপরতা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার টিএমএ মমিন এর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ইচ্ছে থাকলেও অনেক সময় সময় শংকটের করনে ভ্রাম্যমান অভিযান চালানো সম্ভব হয় না, কারন সরকারী অনেক প্রগ্রাম করতেই মাসের সিংহভাগ সময় চলে যায়। তবে বিষয়টি নিয়ে আমি কঠোর পদক্ষেপে যাবো খুব শিগ্রই। সচেতন মহল মনে করে, এব্যাপারে সরকারের কঠোর আইন থাকলেও, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদাসিনতার কারনে তার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অর্থাৎ আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই।